প্রবাসীর বউ-কবিতা/ প্রবাসীর বউয়ের কষ্ট

প্রবাসীদের নানান আত্বত্যাগের কথা আমরা গল্প, নাটক বা সিনেমায় দেখে থাকি কিন্তু প্রবাসীর বউদের আত্বত্যাগের কথা আড়ালেই থেকে যায়। পরিবারকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে একজন প্রবাসী যেভাবে ত্যাগ স্বীকার করেন পাশাপাশি একজন প্রবাসীর বউকেও অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আমাদের সমাজে কিছু সংখ্যক পরিবারে দেখা যায় প্রবাসীর বউদের কারণে সংসারে অনেক ঝামেলার সৃষ্টি হয় বা স্বামী প্রবাসে থাকার কারণে সংসারে নিজের কতৃত্ব প্রতিষ্টা করতে চান আবার অন্যদিকে বেশীরভাগ পরিবারেই তার উল্টোটা দেখা যায় স্বামীর রেখে যাওয়া আমানত সংরক্ষন করতে গিয়ে অনেক লাঞ্চনা আর বঞ্চনার স্বীকার হতে হয় প্রবাসীর বউকে, নিজের শখ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে পরিবারকে ভাল রাখার জন্য হাড় খাটুনি পরিশ্রম করে থাকেন। স্বামীবিহীন নারীকে শশুর,শাশুড়ী,দেবর,ননদ,সন্তানদের নিয়ে ভাল থাকার অবিরাম নিরব যোদ্ধ, আজকের কবিতাটি সেই সব নীরব যোদ্ধাদেরকে উৎসর্গ করে লিখা।

প্রবাসীর বউ

-শওকতুর রহমান

প্রবাসীর বউদের চাইতে সুখে কেহ নেই, 

এমন কথা প্রায়ই শুনি বলতে অনেকেই!

ইচ্ছেমতো শপিং করে কেনে দামী শাড়ি,

প্রবাসীর বউ হয়ে ধন্য এই নারী।

একাউন্টে কাড়ি কাড়ি টাকা আর সোনার গহনা,

চাইলেই সব পেয়ে যায় ধরলেই বাহানা।

মাসে মাসে বউয়ের জন্য বাজেট থাকে বেশী, 

এসব পেয়ে প্রবাসীর বউরা অনেক খুশী। 

শশুর বাড়ির লোকজনের প্রতি ছেলের বেশী টান,

তাদের জন্য অনায়াসে দিতে পারবে প্রাণ। 

বিদেশ থেকে সব টাকাই শশুর বাড়ি যায়,

সংসারের কেউ চাইলেই তা শূন্য হয়ে যায়। 

পারিবারের লোকজন কিংবা পাশে বাসার ভাবি, 

এসব নিয়ে কানাঘুষায় মত্ত থাকেন বেশী।

স্বামী ছাড়া একটা মেয়ে কত অসহায়,

প্রবাসীর বউকে দেখলে তাই বুঝা যায়।

সারাদিনের খাটুনির হয়না মুল্যায়ন, 

ভেবেই নেয় এসব তার কপালের লিখন।

কত লাঞ্চনা বঞ্চনা আর হতে হয় অপমান, 

তাই নিয়ে স্বামীর সাথেই হয় অভিমান।

কেউ বুঝেনা এই প্রবাসীর বউয়ের যন্ত্রণা,

হাজার কষ্টেও মুখ খুলে কাউকে বলতে পারেনা।

বছরের পর বছর চলে যায় পায় না স্বামীর দেখা,

একলা ঘড়েই কাঁটে সময় কাঁদে একা একা।

মনের ক্ষোভে অনেক কথাই জমা করে রাখে, 

ফোনে আজ বলবে সবি প্রিয় স্বামীকে। 

ক্লান্ত স্বামীর চিন্তিত মুখখানা যখন মোবাইল স্কিনে দেখে,

নিজের সব জমা কথা আটকিয়ে রাখে। 

স্বামী বিদেশ রাখতে চায় নানান রকম বায়না,  

বাস্তবতার কাছে হেরে যায় কিছুই আর চায় না।

বাহিরটা দেখে সবাই ভেতর কেউ দেখেনা,

এমন যন্ত্রনার জীবন মেনে নেওয়া ছাড়া কিছুই করার থাকেনা।

পরিবারে স্বাচ্ছন্দ আনতে প্রবাসী জীবন বাজি ধরে, স্বামী থেকে প্রবাসীর বউ কম নাহি সহে।

তাদের এই আত্বত্যাগের মুল্যায়ন করা চাই সবে, 

তা না হলে তাদের প্রতি অন্যায়ই হবে।