প্রবাস থেকে দাদীকে নিয়ে লেখা কবিতা। দাদীমা।
দাদীমা
- শওকতুর রহমান
ভিসা যখন হাতে পেলাম খুশির ছিলনা তো শেষ,
সবাই ছিল আত্বহারা নিজের লাগছিল তাই বেশ। ব্যাতিক্রমী দাদীর মুখটি ছিল ভারী চোখে ছিল জল, হাতটি ধরে বলল আমায় চলি যাবিরে পাগল?
জড়িয়ে ধরে দাদিকে আদর মাখা সুরে,
বললাম বুড়ি কাঁদছো কেন তোমার জন্য অনেক কিছু আসব নিয়ে ল্যাগেজে করে।
তোকে ছাড়া ক্যামনে থাকুম গল্প হবে কার সাথে?
ফিরে এসে হয়তো দেখবি তখন দাদি নাই আর এই দুনিয়াতে।
এমন কথা বলনা দাদী ফিরছি বছর শেষের আগেই,
তোমার জন্য সতীন আনবো বিদেশ থেকে ফিরেই।
দাদী আমার কথা শুনে মুচকি হাসি দেয়,
লাল টুকটুকে সতীন দেখে ভুলে যাবি আমাকেই।
বিদায় বেলায় সবার চেয়ে কান্নাকাটি দাদীই বেশী করে, কান্না দেখে আমার চোখের জল বাঁধা নাহি মানে।
আসার পর মাঝে মাঝে টেলিফোনে কিছু কথা হয়, অনেক কথাই বুঝেনা সে মন খুলে আর কথা নাহি হয়। প্রায়ই শুনি দাদীর শরীল তেমন ভাল নেই,
আগের মতো কথাবার্তা এখন আর বলেনা কারো সাথেই ছয় মাস পরে কাজের মাঝে একদিন বাবার ফোন আসে কাঁদো কাঁদো স্বরে,
তোর দাদী চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে।
আসমান ভাঙিয়া মাথায় পড়লো পিছন থেকে ধাক্কা দিল কেউ,
চোখ খুলে চেয়ে দেখি শুয়ে আছি আশেপাশে নেইতো আর কেউ।
দাদীর কথা মনে পড়তেই কলিজাটা মোচর দিয়ে উঠে,
অনেক কথা বলা হবে না প্রিয় দাদীমাকে।
প্রবাস জীবন কাঁটছি দাদী এ যেন দেয়াল বিহীন এক জেলখানা,
প্রতিদিন তোমার মুখখানা ভেসে উঠে মনের আয়নায়।
নি:স্বার্থভাবে তোমার মত কেউ ভাসবে না আর ভালো, আড়ালে লুকিয়ে আর কেউ খাওয়াবেনা, পকেটে টাকা দিয়ে বলবেনা খেয়ে নিস যা লাগে ভাল।
শেষ দেখাটা দেখার কষ্ট দাদী আজীবন আমায় পোড়াবে,
তোমার শূন্যতা কোনদিন পুরণ নাহি হবে।
Comments
Post a Comment