প্রিয় স্বদেশ ফেরা - শওকতুর রহমান বিদেশের চাকচিক্য আর আভিজাত্য দেখে দেখে যখন ফেরা হয় নিজ দেশে, এয়ারপোর্টের বাইরে বেরুলেই সবকিছু কেমন যেন পুরনো পুরনো লাগে। ফ্লাইওভার ফুটপাত সবই আছে বিদেশেরই মত, অযত্নে পড়ে আছে সব দেখার কেউ নেইতো। রাস্তায় নেই কোন শৃঙ্খলা নিয়মের তোয়াক্কা করছেনা কেউ, চলছে সবাই যার যার মত করে ঘটনা ঘটে আবার শেষ হয়ে যায় নিমিষেই। খোদ রাজধানীতেই গাড়ির হর্ন আর ধুলুবালিতে একাকার সব, মাঝে মাঝে ধুলুর কারণে দেখাই যায় না পথ। অসময়ে রাস্তার সংস্কার খুড়োখুড়িতে সৃষ্ট এই যানজট, এলোমেলো গাড়ির জটলা আর মানুষের শোরগোলে অস্থির রাজপথ। এতকিছুর মাঝেই যখন মাটির ঘ্রাণ নাকে ভেসে আসে, রাস্তার ঐ রঙ যাওয়া গাড়িটাও দেখতে ভালই লাগে। মনের মাঝে অন্যরকম শিহরণ জাগে যেমনটা প্রেমে পড়লে, হাজার ভুল থাকলেও তা আর চোখে পড়েনা, ঠিক তেমনি দেশের মায়ায় চাপা পড়ে অভিমান, সুন্দর লাগে যে সবি, গেয়ে উঠে মন সকল দেশের রাণী তুমি আমার জন্মভূমি। রাস্তার দু পাশে সবুজের সমারোহ দেখে আনন্দের নেইতো কোন শেষ, মনে হয় এইতো আমার ভালবাসার প্রিয় বাংলাদেশ। যার টানে নরম বিছানায় কতরাত ঘুমহীন কেঁটেছে আমার, যা...
আয়না - শওকতুর রহমান আজ সকালে আয়না দেখে চমকে গেলাম নিজেই, পাক ধরেছে দাড়িতে আর পাঁচ ছয়টা গোঁফে। চুলগুলা সব ঝড়ে পড়ছে মাথায় পড়ছে টাক, যৌবনকালটা বিদায় নিচ্ছে বৃদ্ধ হতে পড়ছে আমার ডাক মুখের চামড়ায় ভাজ ধরছে চোখের নিচে কালি, রঙিন দিনগুলি মোর কোথায় চলে গেলি? কোথায় গেল দুরন্ত কৈশোর যাচ্ছে চলে যৌবন, এসব কথা ভাবলেই এখন বিষন্নতায় ভরে উঠে মন। বয়স আমার বাড়ছেই কেবল লাফিয়ে যাচ্ছে দিন, চাহিদাকে পুরণ করতে বাড়ছেই শুধু ঋণ। কিসের নেশায় মত্ত হয়ে ভুলে গেছি সব, ভুলেই আছি কিসের জন্য পাঠিয়েছিলেন রব। হাসন রাজার কথার মর্ম বুঝিনিতো আগে, সেই গানটি শুনতে এখন বেশতো ভালই লাগে। মাঝে মাঝে আনমনে গেয়ে উঠে মন, কি ঘড় বানাইমু আমি গাইছেন হাসন করিয়া কান্দন। স্বাদের জীবন ঠিকই তবে শেষ হয়ে যাবে, আফসোস নিয়ে এই পৃথিবী একদিন ছেড়ে যেতে হবে।
কোটা আন্দোলন -শওকতুর রহমান আবু সাঈদ,আসিফ,রাফি, ওয়াসিম ও আদনান, এ যুগের অকুতভয় বীর যোদ্ধারা যারা হাসিমুখে দিয়ে গেলেন প্রাণ। নাম না জানা আরো কতশত বীর প্রাণ বিলীয়ে দিয়েছেন অকালে, অধিকার আদায়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি দাবী একটাই কোটা সংস্কারের। বায়ান্ন কিংবা একাত্তরের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর দেখা গেল চব্বিশে কোটা আন্দোলনে, আবারো বিজয় তাদেরই হলো যারা মরণকে জয় করতে জানে। বন্দুকের নল দিয়ে থামানো যায় না ন্যায্য অধিকার, ইতিহাসে নতুন করে এ নিয়ে লেখা হবে আবার। নতুন প্রজন্ম নিয়ে অনেকের মাঝেই দেখা দিয়েছিল উদ্বেগ উৎকন্ঠা, ভুল প্রমানিত করল তারা বিলীয়ে দিয়ে নিজের জীবনটা। মানুষের অধিকার আদায়ে মোবাইল ছুঁড়ে দিয়ে উঠতে পারে এ হাতে লাঠি, অন্যায় হতে রক্ষা করবে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত মাটি। ওরা আমাদের গর্ব ওরাই আমাদের নতুনভাবে বাঁচার অনুপ্রেরণা, দেশের স্বার্থে জীবন তুচ্ছ প্রমানে একটুও পিছপা হলো না। মা, মাটি, দেশ যাদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছিল সবার আগে, তারাই মাতৃভূমির জন্য জীবন দিয়েছেন যুগে যুগে।
Comments
Post a Comment