Posts

Showing posts from October, 2024

জিহ্বা। কবিতা জিহ্বা।Jebba

Image
জিহ্বা -শওকতুর রহমান তুলার মত তুলতুলে সে আঘাত তাহার শক্ত, এক নিমিষেই শত্রু বাড়ে বাড়তে পারে ভক্ত। জাদুমাখা কথার চলে হয় যে প্রিয়ভাষী, সেই কথার কারণেই আবার হতে পারে দোষী।  ছুরি বটি কোড়ালের চাইতে ধারালো তাহার আক্রমন,   এক খোঁচাতেই ভাংতে পারে মানুষেরই মন। প্রিয় থেকে অপ্রিয় হতে তাহার জুড়ি মেলা ভার, তার কারণে হতে পারেন অপ্রিয় সবার। সঠিক স্থানে যথাযত হয়না যখন প্রয়োগ, নষ্ট করে আত্বীয়তা সম্পর্ক হয় তখন বিয়োগ। তাহার জন্য প্রশংসা আবার তার কারণেই তীরস্কার,   সঠিক বাক্যে ব্যাবহারে পায় অনেকেই পুরস্কার।  সর্বগুণে গুণান্বিত এমন অনেকেই হয়েছেন লাঞ্চিত,  অসাবধানতায় অঘটন ঘটে হতে হয় সম্মান থেকে বঞ্চিত। স্বাদ কিবা অস্বাদের বিচারে সে খুবিই বিচক্ষণ, অনায়াসে ধরতে পারে গুণগত মান। ইচ্ছে যদি থাকে মনে স্নেহ কিংবা সমীহ করবে সবে, সঠিক ভাবে জানতে হবে তার ব্যবহার আগে। মানব সমাজে খুঁজলে পাবে তাহার ভাল কাজের অগণিত উদহারণ, প্রতিষ্ঠিত হতে পার যদি কর তাহার সঠিক মুল্যায়ন।

প্রেমের স্মৃতি। প্রেমের কবিতা। হারানো প্রেমের স্মৃতি ।

Image
প্রেমের স্মৃতি -শওকতুর রহমান কখনো যদি কেউ প্রশ্ন করে জীবন সুন্দর ছিল কবে? অবলীলায় বলতে পারি তাহার সাথে কাটানো সময়টাতে।  কদাকার চলার পথ তার পরশ পেয়ে হয়ে উঠেছিল মসৃণ নির্জীব তপ্ত পাথরের উপর সেদিন হয়েছিন বর্ষণ।  ফুলে ফুলে ভরা আর সবুজের সমারোহে ভরে উঠেছিল বাগান, সে ছিল কারিগর জীবন করেছিল মহান। অপেক্ষার তিক্ততা লাগতো যেন খুবই মধুর,  তাহার আগমনে অজান্তে মনের মাঝে বাজতো প্রেমের সুর। ডাগর চোখের পাঁপড়িগুলো যেন ছিল কালো গোলাপ, মুক্তোঝরানো হাসিতে ছিল এক মায়াবী ছাপ। প্রেম জীবনের শ্রেষ্ট সময় দিবাস্বপ্ন বিভোর থাকতো মন, সারাক্ষন এই মনে ছিল শুধু তাহার বিচরণ।  রঙে রঙিন চারপাশ ছিল স্বপ্নের ছড়াছড়ি, অবাস্তব কল্পনাগুলি জমা হতে হতে হত একঝুড়ি।  দিন রাত তাহার কথামালায় গেঁথে যেত মন, এই কথার মায়াবী জাদুতে আনন্দে ঝলমল করতো দু- নয়ণ।  কাঠখড় পোহাতে পোহাতে জীবন আজ দুই তৃতীয়াংশ অতিক্রম হলো, অর্জন বলতে তাকে পেয়েই শুধু পুর্ণতা পেয়েছিল।  বাস্তব স্বপ্নকে ছোঁয়ার মাধ্যম ছিলে তুমি,  তোমাকে পেয়ে ধন্য হয়েছিলাম এই অধম আমি। 

প্রবাস থেকে দাদীকে নিয়ে লেখা কবিতা। দাদীমা।

Image
  দাদীমা - শওকতুর রহমান ভিসা যখন হাতে পেলাম খুশির ছিলনা তো শেষ,  সবাই ছিল আত্বহারা নিজের লাগছিল তাই বেশ। ব্যাতিক্রমী দাদীর মুখটি ছিল ভারী চোখে ছিল জল, হাতটি ধরে বলল আমায় চলি যাবিরে পাগল? জড়িয়ে ধরে দাদিকে আদর মাখা সুরে,  বললাম বুড়ি কাঁদছো কেন তোমার জন্য অনেক কিছু আসব নিয়ে ল্যাগেজে করে। তোকে ছাড়া ক্যামনে থাকুম গল্প হবে কার সাথে?  ফিরে এসে হয়তো দেখবি তখন দাদি নাই আর এই দুনিয়াতে। এমন কথা বলনা দাদী ফিরছি বছর শেষের আগেই,  তোমার জন্য সতীন আনবো বিদেশ থেকে ফিরেই। দাদী আমার কথা শুনে মুচকি হাসি দেয়, লাল টুকটুকে সতীন দেখে ভুলে যাবি আমাকেই। বিদায় বেলায় সবার চেয়ে কান্নাকাটি দাদীই বেশী করে, কান্না দেখে আমার চোখের জল বাঁধা নাহি মানে।  আসার পর মাঝে মাঝে টেলিফোনে কিছু কথা হয়,  অনেক কথাই বুঝেনা সে মন খুলে আর কথা নাহি হয়।  প্রায়ই শুনি দাদীর শরীল তেমন ভাল নেই,  আগের মতো কথাবার্তা এখন আর বলেনা কারো সাথেই ছয় মাস পরে কাজের মাঝে একদিন বাবার ফোন আসে কাঁদো কাঁদো স্বরে,  তোর দাদী চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে। আসমান ভাঙিয়া মাথায় পড়লো পিছন থেকে ধাক্কা দিল কেউ, ...

ফিরে দেখা অতীত। কবিতা ফিরে দেখা

Image
ফিরে দেখা অতীত  -শওকতুর রহমান ছোট্টকালে   দেখতাম সবাই আড্ডা দিতেন একসাথে,  আজ সবাই মিশে গেছেন সাড়ে তিন হাত মাটিতে। বাপ চাচার কথাবার্তায় হুইহুল্লোড়ে বাড়ি থাকতো সরগরম, এখন সেই বাড়িতে সন্ধ্যে নামলে ভুতুড়ে নিরবতায় কেঁপে উঠে মন। বাড়ির কিছু নষ্ট করবে এমন সাহস আছে কার?  বড় চাচার হুংকারে পথ থাকতো না পালাবার। বাড়ির মধ্যে বড় চাচার মেজাজ ছিল বেশ কড়া, তার সামনে যে পড়েছে তার হাতেই পরতো হাতকড়া। খ্যাতি যশ সবই ছিল ছিলেন ভাল বিচারক, এমনি করে সবার চলে যাওয়া সত্যি হ্দয় বিদারক।   দুপুর বেলায় বাবার সাথে গ্রামের দাদা,চাচা জড়ো হয়ে  গাছের ছায়ায় বসে, কত মজার গল্প বলতেন উঠতো সবাই হেসে হেসে।  বাবা পুথি পাঠ করতেন কেউবা করতেন মারিফতি গান, সমধুর গলায় পুথি পাঠ শুনে ভরে যেত মন প্রাণ।  কেউবা আবার জমি নিয়ে করতেন গবেষণা,  কোন জমিতে কোন ফসল ফলালে ভালো হবে তাই নিয়েই আলোচনা। হিংসা বিদ্বেষ ছিলনা কারো মাঝেই ছিল ভালোবাসার টান, কারো বিপদ শুনলেই সবাই এক হয়ে করতেন সমাধান। এক এক করে সবাই এখন পরপারে এই পৃথিবী ছেড়ে,  আগের মত আড্ডা দেখা যায়না গাছের ছায়ায় বস...

প্রবাসীর মা কবিতা।মায়ের ছেলে প্রবাসী

Image
প্রবাসীর মা -শওকতুর রহমান ছু টিশেষে যখন রওয়ানা দেব ব্যাগটা হাতে নেই, মায়ের মুখটা কালো মেঘে ঢেকে যায় নিমিষেই।   হাত ধরে মা বলে খোকা আবার কবে আসবি বাবা?  তোর এই চলে যাওয়াটা আমার ভাল লাগেনা, এইতো ক'দিন হয় এলি... আর এসেই তোর যাওয়ার সময় হয়ে গেল।  এবার বাড়িতে এসে কিছুই খেলিনা! শরীলটা আজকাল ভাল থাকেনা, নিজেও রেঁধে ভালমন্দ কিছু খাওয়াতে পারিনি তোকে, ব্যাগে কিছু জিনিস বেঁধে দিয়েছি গিয়ে খেয়ে নিস।  আবার যখন আসবি একেবারেই চলে আসবি অনেকতো হলো... সেই ছোট্ট খোকা আমার গিয়েছিলি ২৩ বছর আগে এবার চলে আয় বাপ!  ছোট খোকাটা বিদেশ থেকে যা দিবে তাতেই চলে যাবে আমাদের,  তুইতো আর বসে থাকবি না একটা কিছু হবেই।  হাতটি ধরে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে মায়ের আর্তনাদ, ছেলে মাকে বুঝায় এবারই শেষ মা! তোমাদের ছেড়ে থাকতে আর ভাল লাগেনা, কেঁদোনা মা যাবার সময় তোমার কান্নাটা আমার বুঁকে তীরের মত এসে গাঁথে।  সবার কাছ থেকে গোমড়া মুখে বিদায় নিতে পারলেও, মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিতে অশ্রু বাঁধ মানেনা। ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে চোখের জলে বিদায় নিয়ে ছেলে রওয়ানা হয়,  অনেকটা পথ মা পিছন পিছন আসে যেন মনে হয়,...